জেনেরেটর কি? কত প্রকার ও কি কি? এসি ও ডিসি জেনারেটর এর প্রকারভেদ

types of generator


জেনেরেটর কি

যে যন্ত্রের সাহায্যে যান্ত্রিক শক্তিকে বৈদ্যুতিক শক্তিতে রুপান্তরিত করা হয় তাকে জেনেরেটর বলে। এই রাপান্তরন প্রকিয়া সম্পাদনের জন্য Magnetic field তৈরির প্রয়োজন হয়।জেনেরেটর কি

আরমেচার এর উপরিভাগে তারের কয়েল বসানো থাকে। চুম্বকক্ষেত্রের ভিতরে আরমেচারটিকে ঘুরানোর জন্য প্রয়োজন হয় একটি প্রাইমমুভার (ইঞ্জিন)। আরমেচার কয়েলকে যদি চুম্বক্ষেত্রের মধ্যে ঘুরানো হয় তবে আরমেচার পরিবাহীতে ভোল্টেজ উৎপন্ন হয় তবে তাকে EMF (Electro motive Force) বলে।

জেনেরেটর সাধারনত দুই প্রকার

১। এসি জেনারেটর
২। ডিসি জেনারেটর

এসি জেনারেট এর গঠন

বর্তমান যুগে এসি জেনারেটরের প্রচলন সবচেয়ে বেশি। এসি জেনারেটরে একটি ক্ষেত্রচুম্বক থাকে এবং চুম্বকের মাঝখানে ১ টি কাঁচা লোহা এর পাতের উপর তারের একটি আয়তাকার কুন্ডলী থাকে। এখানে যে কাঁচা লোহার পাত থাকে সেটাকে আর্মেচার বলা হয়ে থাকে। এখন এই আর্মেচারকে চুম্বকের দুই মেরুর ঠিক মাঝখানে যান্ত্রিক শক্তি দিয়ে সমান দ্রুতিতে ঘুরানো হয় । দুই প্রান্তের দুইটি স্প্রিং এর সাথে আয়তাকার কুন্ডলী সংযুক্ত থাকে। এই স্প্রিং দুটি আর্মেচারের একই অক্ষ এর বরাবর ঘুড়তে পারে। এমনভাবে কার্বন নির্মিত দুইটি ব্রাশ স্থাপন করা হয় যাতে আর্মেচার ঘুরার সময় স্প্রিং দুটিকে স্পর্শ করে এবং ব্রাশ দুটির সাথে বহিবর্তনীর রোধ সংযুক্ত থাকে। মুলত এটি একটি জেনারেটের এর গঠন প্রানালী ।

এসি জেনারেট এর কার্যপ্রনালী

যখন আরমেচারকে ঘুরানো হয় ঠিক তখন আর্মেচার কুন্ডলী চম্বুকক্ষেত্রের বলরেখাগুলো কে ছেদ করে এবং তাড়িতচৌম্বক আবেশের নিয়মান অনুযায়ী কুণ্ডলীতে তড়িৎ চালক শক্তি আবিষ্ট হয় এবং কুণ্ডলীর দুই প্রান্ত বহিবর্তনীর সাথে সংযুক্ত থাকার কারনে বর্তনীতে পর্যাবৃত্ত তড়িৎ প্রবাহের উৎপত্তি হয় । এই আবিশষ্ট তরিৎ প্রবাহেরে মান সাধারনত চৌম্বক ক্ষেত্রের প্রাবল্য এবং ঘূর্ণন বেগ এর উপর নির্ভর করে। কুন্ডলীর ১ বার ঘুর্ননের মধ্যে আবিষ্ট তড়িৎ প্রবাহের অভিমুখও ১ বার পরিবর্তিত হয় এবং এভাবেই যান্ত্রিক শক্তি হতে বিদ্যুৎ শক্তি উৎপন্ন করা হয়।

এসি জেনারেটর এর প্রকারভেদ

এসি জেনারেটর দুই প্রকার

১। ইন্ডাকশন জেনারেটরঃ ইন্ডাকশন জেনারেটর সাধারন জেনারেটর এর মতই অল্টারনেটিং কারেন্ট জেনারেটর এবং সাধারন জেনারেটর এর মত একই কার্যপ্রনালীতে কাজ করে। এই জেনারেটর এর কার্যপ্রনালী ট্রান্সফর্মারের মতই শুধু পার্থক্য হল ট্রান্সফরমার একটি স্ট্যাটিক ডিভাইস এবং জেনারেটর একটি ঘুর্নায়মান ডিভাইস। এগুল সাধারনত ছোট মেশিন যেমন মিক্সার এ ব্যাবহার হয়।
২। সিঙ্ক্রোনাস জেনারেটরঃ এই জেনারেটর হচ্ছে অল্টারনেটিং কারেন্ট জেনারেটর যেটা সিঙ্ক্রোনাস স্পিডে ঘুরে। এগুলো পাওয়ার প্লান্টে ব্যবহার করে হয় এদের উচ্চতর দক্ষতার কারনে। সিঙ্ক্রোনাস জেনারেটর ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ইন্ডাকশনের ফ্যারাডের সুত্র অনুসারে কাজ করে।




সুবিধা

  • সাধারন ডিজাইন
  • ছোট সাইজের হয়
  • লস খুব কম হয়
  • কম মেইন্টেন্যান্স এর প্রয়োজন হয়।
  • ব্রেকার এর সাইজ তুলানামুলক ছোট হয়।

ডিসি জেনারেটর

ডিসি জেনারেটর হচ্ছে ডাইরেক্ট কারেন্ট জেনারেটর যা হচ্ছে একপ্রকারের ইলেক্ট্রিক্যাল মেশিনের মত কাজ করে যা মেকানিক্যাল এনার্জিকে ডাইরেক্ট কারেন্টে রুপান্তর করে। এই রুপান্তরন প্রকিয়াটি Induced EMF এর নিতী অনুসরন করে।

ডিসি জেনারেটরের এর গঠন

ডিসি জেনারেটরকে ডিসি মোটর হিসেবে ব্যাবহার করা যায় কোনরকম পরিবর্তন ছাড়াই। তাই ডিসি মোটর বা জেনারেটরকে ডিসি মেশিন হিসেবে বলা যেতে পারে। ডিসি মেশিন স্ট্যটর এবং রোটর সাধারনত এই দুইটি অংশ দ্বারা গঠিত। ৪ পোল ডিসি মেশিনের গঠন প্রানলী নিম্নে দেওয়া হলঃ

ডিসি জেনারেটরের বেসিক কম্পনেন্ট সমুহ

ইয়োকঃ মেশিনের বাইরের আবরনীকে ইয়োক বলা হয়। এটি কাষ্ট আয়রন বা স্টিল দারা তৈরি করা হয়। সম্পুর্ন এসেম্বলিকে ধরে রাখে এটি।

পোলসঃ পোল গুলো ইয়োকের সাথে বোল্ট দ্বারা যুক্ত করা হয়। পোল এর সাথে ফিল্ড উয়ান্ডিং পেচানো থাকে।

ফিল্ড উয়ান্ডিংঃ ফিল্ড উয়ান্ডিং কপার দ্বারা তৈরি করা হয়। এগুলো প্রত্যেক পোল এর সাথে পেচানো অবস্থায় সিরিজে যুক্ত থাকে।

আর্মেচার কোরঃ এটি হচ্ছে ডিসি মেশিনের রোটর। এটি দেখতে সিলিন্ডার আকৃতির শেপ, অনেকগুলো স্লট দ্বারা তৈরী যা আর্মেচার উয়ান্ডিং গুলো বহন করে। আর্মেচার পাতলা লেমিনেটেদ গোলাকার স্টিলের ডিস্ক দিয়ে তৈরি যেন Eddy কারেন্ট লস না হয়।

আর্মেচার উয়ান্ডিংঃ এটা হচ্ছে প্যাচানো কপার কয়েল যা আর্মেচার স্লটের মধ্যে থাকে। আর্মেচার কন্ডাক্টর গুলো ইন্সুলেটেড থাকে একটা থেকে অন্যটা থেকে এবং আরমেচার কোর থেকেও আলাদা থাকে।

কমুটেটরঃ এটি দেখতে সিলিন্ডার আকৃতির এবং এখানেই কারেন্ট স্টোর হয়ে থাকে এবং পরবর্তী স্টিপে সঞ্চালনের জন্য তৈরি হয়।

ব্রাশঃ এটি মুলত কন্টাক্ট সাপ্লাই দেওয়ার জন্য ব্যাবহার করা হয়। এবং আউটপুট সাপ্লাই ও এখান থেকেই হয়।

ডিসি জেনারেটর এর প্রকারভেদ

১.সেলফ এক্সাইটেড ( Self excited) - এই ধরনের জেনারেটর এ ফিল্ড কয়েল গুলো এনারজাইজড হয় জেনেরেটর দ্বারা উৎপাদিত কারেন্ট দ্বারা। এই জেনেরেটর আবার তিন ধরনের হয়ঃ

a) সিরিজ জেনারেটর  b) শান্ট জেনারেটর  c) কম্পাউন্ড জেনারেটর।

২. সেপারেটলি এক্সাইটেদ ( Separately excited) - এই ধরনের জেনারেটর এ ফিল্ড কয়েল গুলো এনারজাইজড হয় স্বাধীন বহির্মুখী ডিসি উৎস থেকে।

সুবিধাঃ
  • অতি সাধারন ডিজাইন
  • অপারেশন সহজ
Our youtube channel

জেনেরেটর কি

0/Post a Comment/Comments

Previous Post Next Post

Multiplex ads