গিয়ার কি এবং কত প্রকার? প্রত্যেক প্রকার গিয়ারের বর্ননা

গিয়ার কি এবং কত প্রকার? প্রত্যেক প্রকার গিয়ারের বর্ননা

গিয়ার: গিয়ার হচ্ছে সিলিন্ডাকৃতির দাঁতের সমষ্টি যা ঘুর্নায়মান শক্তিকে ড্রাইভিং শ্যাফট থেকে ড্রাইভেন শ্যাফট এ চালিত করে। গিয়ার বিভিন্ন প্রকারের আছে। সাধারনত এটা ড্রাইভিং শ্যাফট এবং ড্রাইভেন শ্যাফটের স্পিড,টর্ক পরিবর্তন করতে ব্যবহার হয়।

গিয়ার বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রিয়াল এপ্লিকেশনে ব্যবহার হয় শক্তি এবং গতিকে বিভিন্ন প্রকার মেকানিক্যাল ডিভাইসে যেমন অটোমোবাইল এবং মেশিনপত্র।

যদি দুইটি গিয়ারের মেশ একটি অপরটির সাথে যুক্ত হয় এবং যেকোন দিকে ঘোরা শুরু করে তাহলে দ্বিতীয় গিয়ার বিপরীত দিকে ঘোরা শুরু করবে।

বিভিন্ন প্রকার প্রকার গিয়ার আছে আর এক এক প্রকার গিয়ারের একে প্রকার দক্ষতা এবং উপকারিতা রয়েছে।

গিয়ার যে সব কাজে ব্যবহার হয়ে থাকে তার নিম্নরুপঃ

  • ঘুর্নায়মান গতি পরিবর্তন করতে
  • ঘুর্নায়মান গতি নিয়ন্ত্রন করতে
  • শক্তি বদ্ধি করতে
  • ঘুর্নকে দুইটি এক্সিসে সিঙ্ক্রোনাইজ করতে। 

গিয়ারের প্রকারভেদ

  • স্পার গিয়ার
  • হেলিক্যাল গিয়ার – a) সিংগেল হেলিক্যাল গিয়ার b) ডাবল হেলিক্যাল গিয়ার
  • হেরিংবন গিয়ার
  • র‍্যাক এবং পিনিয়াম গিয়ার
  • ওয়ার্ম গিয়ার
  • বেভেল গিয়ার

গিয়ার কি এবং কত প্রকার? প্রত্যেক প্রকার গিয়ারের বর্ননা

স্পার গিয়ার:
সাধারনত দুইটি প্যারালেল শ্যাফটে শক্তি সঞ্জালনের জন্য স্পার গিয়ার ব্যবহার হয়ে থাকে। যখন অনেকগুলো সমান্তরাল এবং সোজা আকৃতির দাত কোন সিলিন্ড্রিক্যল শ্যাফট এর উপর কাটা হয় তখন তাকে স্পার গিয়ার বলে।

স্পার গিয়ার ঘুর্নায়মান শক্তি উৎপাদ করে এবং এর ট্রান্সমিশন দক্ষতা অনেক বেশি। স্পার গিয়ার সাধারনত দুই ধরনের হয়ে থাকে একটি হচ্ছে এক্সটার্নাল স্পার গিয়ার এবং অপরটি হচ্ছে ইন্টারনাল স্পার গিয়ার। যখন গিয়ারের দাত সিলিন্ডার সার্ফেসের বাইরের দিকে লেগে থাকে তখন সেটাকে এক্সটার্নাল গিয়ার এবং যদি গিয়ারের দাত সিলিন্ডারের ভিতরের সার্ফেসের সাথে লেগে শক্তি সঞ্জালন করে তখন তাকে ইন্টার্নাল স্পার গিয়ার বলে।
গিয়ার কি এবং কত প্রকার? প্রত্যেক প্রকার গিয়ারের বর্ননা

হেলিক্যাল গিয়ার: হেলিক্যল গিয়ারের দাঁত সমান্তরাল নয় এবং এটিকে এংগেল করে কাটা হয় যেটাকে হেলিকয়েড টিথ বলা হয় আর এই হেলিকয়েড টিথ সিলিন্ড্রিক্যাল শেপ গিয়ারে থাকে। হেলিক্যাল গিয়ার খুব কম শব্দ তৈরি করে এবং খুব উচ্চ শক্তি স্থানান্তর করতে পারে। শক্তি স্থানান্তরের সময় এক্সিস ডাইরেকশনে হেলিক্যাল গিয়ার থার্স লোড উৎপন্ন করে। এটি স্পার গিয়ারের তুলনায় নিরব এবং অপারেশনের দিক দিয়ে তুলনামুলক স্মুথ।
গিয়ার কি এবং কত প্রকার? প্রত্যেক প্রকার গিয়ারের বর্ননা

হেরিংবন গিয়ার : যখন দুইটি হেলিক্যাল গিয়ারকে বিপরীত দিক থেকে পাশাপাশি জোরা দেওয়া হয় এবং এটি সমান্তরাল অথবা অসমান্তরাল শ্যাফটে শক্তি স্থানান্তর করে তখন তাকে হেরিংবন গিয়ার বলে। এই গিয়ার হেলিক্যাল গিয়ারের তুলনায় কম শক্তি উৎপাদন করতে পারে কিন্তু এটি সুক্ষ পাওয়ার ট্রান্সমিশনের জন্য খুবই উপযোগী।
গিয়ার কি এবং কত প্রকার? প্রত্যেক প্রকার গিয়ারের বর্ননা
র‍্যাক এবং পিনিয়ন গিয়ার: র‍্যাক এবং পিনিয়াম গিয়ার ঘুর্নায়মান গতিকে রৈখিক গতিতে রুপান্ত করে। যখন পিনিয়ন ঘুরতে শুরু করে তখন র‍্যাক সোজাসুজি বা রৈখিক গতি অর্জন করে। পিনিয়নের সিলিন্ড্রিক্যল শ্যাফট এর উপর কাটা অনেকগুলো দাঁত এবং র‍্যাকে সোজাসুজি রেকট্যাংগেল আকৃতির অংশে অনেকগুলো দাঁত বসানো থাকে আর এগুলো পিনিয়নের সাথে মেশ এর মাধ্যেমে যুক্ত থাকে। র‍্যাক এবং পিনিয়াম অটোমোবাইল এবং মেশিন টুলস এ সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয়ে থাকে।
গিয়ার কি এবং কত প্রকার? প্রত্যেক প্রকার গিয়ারের বর্ননা

ওয়ার্ম গিয়ার:একটি সিলিন্ড্রিক্যাল গিয়ার যেটা ওয়ার্ম এর সাথে মেশ আকারে থাকে এবং অসমান্তরাল, অবিচ্ছেদ্য শ্যাফটে শক্তি স্থানান্তর করে। এর গিয়ার রেশিও অনেক বড় এবং এটি সাধারনত শান্ত এবং সুক্ষ অপারেশনে সক্ষম। সিলিন্ড্রিক্যাল গিয়ার ওয়ার্মকে গুরাতে পারে না কিন্তু ওয়ার্ম সিলিন্ড্রিক্যল গিয়ারকে ঘুরাতে পারে আরে এ কারনেই এটা সেলফ লকিং এর জন্য খুবই উপযোগী। এর প্রধান অসুবিধা হচ্ছে এর ট্রান্সমিশন দক্ষতা খুব কম এবং এটি ফ্রিকশন জেনারেট করে এবং এ কারনে এই টাইপের গিয়ারে সর্বদাই লুব্রিকেশনের প্রয়োজন হয়।
গিয়ার কি এবং কত প্রকার? প্রত্যেক প্রকার গিয়ারের বর্ননা

বেভেল গিয়ার: যে গিয়ারে স্পাইরাল অথবা হেলিক্যলা দাঁত থাকে যেগুলো কোন বরাবর কাটা হয় এবং দুইটি পারপেন্ডিকুলার শ্যাফটে শক্তি স্থানান্তর করে সেটাই বেভেল গিয়ার হিসেবে পরিচিত। বেভেল গিয়ার খুব একটা বেশি টর্ক ট্রান্সমিট করতে পারে না এবং এটাতে রাইট এংগেল গিয়ার ড্রাইভের প্রয়োজন হয়। বেভেল গিয়ার সাধারনত বেশি ব্যবহার হয় প্রিন্টিং প্রেস, অটোমোবাইল এবং মেরিং এপ্লিকেশনে।

0/Post a Comment/Comments

Previous Post Next Post

Multiplex ads