ট্রান্সমিশন ফ্লইড কি (What is Transmission fluid) I অটোমেটিক ট্রান্সমিশন ফ্লইড এবং ম্যনুয়াল ট্রান্সমিশন ফ্লইড

what is transmission fluid
অনেক প্রকারের লুব্রিকেন্ট আছে যেগুলো দিয়ে কার চলতে পারে এবং এই লুব্রিকেন্ট কার বা গাড়িকে ভাল রাখতে সাহায্য করে। এর মধ্যে প্রয়োজনীয় ফ্লইড হচ্ছে ট্রান্সমিশন ফ্লইড। এখানে একটি বিষয় হচ্ছে অধিকাংশ লোকজন ই ইঞ্জিন ওয়েল পরিবর্তনের গুরুত্তের ব্যাপারে জানে এবং অনেকেই খুব একটা ভাল বুঝে না ট্রান্সমিশন ফ্লইড এর গুরুত্ত সম্পর্কে কখন এটা পরিবর্তন করতে হবে। What is Transmission fluid

ট্রান্সমিশন ফ্লইড কি কাজ করে How transmission fluid works

ট্রান্সমিশন ফ্লইড বিয়ারিং এবং গিয়ার বক্সের মেটাল পার্ট লুব্রিকেশন করে এবং চলন্ত অবস্থায় এদেরকে ক্ষয় হতে রক্ষা করে। অটোমেটিক ট্রান্সমিশনে এটা শুধু মুভিং পার্টসকেই লুব্রিকেট করে না বরং এটা হাইড্রোলিক প্রেসার এবং ফ্রিকশন তৈরি করে অভ্যন্তরীন পার্টস এর কাজ করার জন্য। ট্রান্সমিশন ফ্লইড উভয় ম্যানুয়াল এবং অটোমেটিক ট্রান্সমিশনকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। গিয়ার শিফটিং অতি সহজেই সম্পাদন করতে ট্রান্সমিশন ফ্লইড এর ভুমিকা অত্যান্ত গুরুত্তপুর্ন। অটোমেটিক ট্রান্সমিশন ফ্লইড ম্যানুয়াল ট্রান্সমিশন ফ্লইড এর মত নয়। অটোমেটিক ট্রান্সমিশন ফ্লইড শুধুমাত্র অটোমেটিক যানবাহন এবং ম্যানুয়াল ট্রান্সমিশনে যেখানে ক্লাচ, শিফটার ব্যবহার হয় গিয়ার শিফটিং এর জন্য সেখানে ম্যনুয়াল ট্রান্সমিশন ফ্লইড ব্যবহার করা হয়।

অনেক ধরনের কোয়ালিটির ট্রান্সমিশন ফ্লইড রয়েছে যেটা অটো টেকনিশিয়ান বা ম্যনুয়াল দেখে নির্ধারন করা হয়।

ট্রান্সমিশন ফ্লইড এর প্রকারভেদ (Types of transmission fluid)

ট্রান্সমিশন ফ্লইড দুই প্রকার ১। অটোমেটিক ট্রান্সমিশন ফ্লইড ২। ম্যানুয়াল ট্রান্সমিশন ফ্লইড

অটোমেটিক ট্রান্সমিশন ফ্লইড (Automatic transmission fluid/ATF)

যে সকল গাড়ীতে অটোমেটিক ট্রান্সমিশন ব্যবহার করা হয় সেখানে এই প্রকারের ফ্লইড ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও এটা মর্ডান ম্যনুয়াল ট্রান্সমিশন গাড়ীগুলোতেও ব্যবহার করা হয়। অটোমেটিক ট্রান্সমিশন ফ্লইড (ATF) যে সকল কাজগুলো সম্পুর্ন করে থাকে তা হল • গিয়ার লুব্রিকেশন
• টর্ক কনভার্টার অপারেশন
• ভাল্ব বডি অপারেশন
• ক্লাচ ফ্রিকশন অপারেশন
ব্রেক ব্যন্ড ফ্রিকশন
• ট্রান্সমিশন কুলিং।

ম্যনুয়াল ট্রান্সমিশন ফ্লইড (Manual transmission fluid)

ম্যানুয়াল ট্রান্সমিশন ফ্লইড পুরাতন মডেল এর গাড়িতে ব্যবহার করা হয় বিধাইয় এটা ম্যনুয়াল ট্রান্সমিশন ফ্লইড বলা হয়। এটা ম্যনুয়াল ট্রান্সমিশন কারগুলোতে ব্যবহার করা হয়।

ট্রান্সমিশন ফ্লইড কখন পরিবর্তন করা হয়

ম্যানুয়াল এবং অটোমেটিক উভয় ট্রান্সমিশন ফ্লইড নষ্ট হয়, ময়লা জমে, খারাপ হয় যায়। মটর ওয়েল এর মত ট্রান্সমিশন ফ্লইড ঘন ঘন পরিবর্তনের প্রয়োজন নেই। শুধু একটু নজর রাখা এবং নিয়মিত চেক দেওয়াটা জরুরী। ট্রান্সমিশন ফ্লইড যদি কমে যায় অথবা নষ্ট হয় তাহলে গিয়ার পরিবর্তন এর সময় এর দক্ষতা কমে যাবে এবং সহজেই বোঝা যাবে। এছাড়াও কম ফ্লইড এর কারনে ভেতরের গিয়ার এবং পার্টস ক্ষয় হয়ে যায়। গাড়ীর ধরন, ট্রান্সমিশন টাইপ এবং ম্যনুফ্যাকচারের নির্দেশনা অনুযায়ী সাধারনত ৩০,০০০ থেকে ৬০,০০০ মাইল এর মধ্যে পরিবর্তন করা হয়। এটি গাড়ির মডেল এবং ধরনের উপর অনেকটাই নির্ভর করে থাকে।

কম ট্রান্সমিশন ফ্লইড বোঝার উপায় (Symptoms of low transmission fluid)

ট্রান্সমিশন ফেইলারের অন্যতম কারন হচ্ছে ট্রান্সমিশন ওভারহিটিং। ট্রান্সমিশন ওভারহিটিং এর মূল কারন হচ্ছে ফ্লইড এর পরিমান কমে যাওয়া,নষ্ট ফ্লইড খারাপ হয়ে যাওয়া এবং নিয়মিত ফ্লইড মেইনটেন্যন্স এর অভাব। ট্রান্সমিশন ফ্লইড লিকেজ থাকলে ফ্লইড ধীরে ধীরে কমে যায় এবং ট্রান্সমিশন ওভারহিট হয় এবং স্লিপ করে। লো লেভেল ফ্লইড এর কারনে ট্রান্সমিশনের স্থায়ী ক্ষতি হতে পারে এবং এই কারনে এর রিপিয়ারিং এবং পার্টস পরিবর্তনের খরচ অনেক বেশি হতে পারে। যখন গাড়ি পার্কিং করেন তখন দেখবেন যে লিকেজ আছে কিনা এবং ডিপস্টিক দিয়ে ফ্লইড লেভেল চেক করুন প্রতিবার যখন আপনি ওয়েল পরিবর্তন করবেন।

ট্রান্সমিশন ফ্লইড কমে যাওয়ার কিছু কারন সমূহ

• যদি তেল গাড়ির নিচে পড়ে থাকে তবে বুঝবেন ট্রান্সমিশন ফ্লইড লিকেজ আছে।
• ভাল ফ্লইড রোদের আলোতে পরিস্কার রংঙের হবে এবং যদি এটা গাড় বাদামী বা ময়লাযুক্ত সবুজ রংঙের হয় তবে বুঝতে হবে ফ্লইড পরিবর্তনের সময় হয়ে গেছে।
• যদি এক্সিলেরেশনের সময় অথবা কর্নারিং এর সময় গর্জনের মত শব্দ তৈরি হয় তবে বুঝতে হবে এখানে ট্রান্সমিশনের কিছু সমস্য হচ্ছে। সাধারনত ট্রান্সমিশন ফ্লইড কমে গেলে ঘনঘন এবং ঝনঝন শব্দ হয়।
• লো ট্রান্সমিশন ফ্লইড এর কারনে এমন শব্দ হবে যে মনে হবে গাড়ি রাম্বল স্ট্রিপে ড্রাইভিং করছেন।
• বর্তমানে অনেক গাড়ি আছে যেগুলো আপনার ট্রান্সমিশনে যদি সমস্য থাকে তবে তা বলে দিবে। এছাড়া ড্যাশবোর্ডের লাইট আপনাকে জানিয়ে দিবে স্বাভাবিক যে তাপমাত্রা থাকা দরকার তার চেয়ে ফ্লইড অনেক গরম। এছাড়া ইঞ্জিন লাইট থেকেও ট্রান্সমিশন সমস্য বোঝা যায়।
• গিয়ার শিফটিং এর সময় দেরি হবে, স্লিপিং হবে, স্লাইডিং হবে এবং নয়েজ বা শব্দ হবে যা থেকে বুঝতে হবে ট্রান্সমিশন ফ্লইড এর কোন সমস্য আছে।
• ট্রান্সমিশন স্লিপিং করলে এবং ইঞ্জিন রিভিং করে যখন গাড়ী কর্নারে যায় তবে বুঝতে হবে ট্রান্সমিশন ফ্লইড এ প্রবলেম আছে।
• এছাড়া পোড়া পোড়া একটা গন্ধ আসবে ফ্লইড থেকে তখন বুঝতে হবে ট্রান্সমিশন ফ্লইড এ সমস্য আছে।

0/Post a Comment/Comments

Previous Post Next Post

Multiplex ads