চিলার কি (What is chiller)? চিলার কত প্রকার কি কি? বিভিন্ন প্রকার চিলারের বর্ননা


what is chiller

চিলার কি?What is chiller

চিলার হল এমন একটি রিফ্রিজারেশন ডিভাইস যা ভ্যাপার কমপ্রেশন অথবা ভ্যাপার অ্যাবসরপশন রিফ্রিজারেশন সাইকেলের মাধ্যমে প্রসেস ফ্লুয়িড থেকে তাপ অপসারণ করে। প্রসেস ফ্লুয়িড সাধারণত পানি অথবা পানি ও গ্লাইকোল মিশ্রণ হয়। এই প্রসেস ফ্লুয়িড হিট এক্সচেঞ্জারের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত করে যন্ত্রপাতি, খাবার ইত্যাদি ঠাণ্ডা করা হয়।What is chiller

চিলার কি কাজে ব্যাবহার করা হয়?

যে কোন স্থানের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রিতভাবে কমানোর জন্য চিলার ব্যাবহার করা হয়। যেমনঃ
  • শিল্প কারখানা, হোটেল, হাসপাতাল, অফিস বিল্ডিং এর তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ
  • খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাতকরণ
  • মেটাল ফিনিশিং, যেমনঃ ইলেক্ট্রোপ্লেটিং ও ইলেক্ট্রোলেস প্লেটিং এর সময় তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ
  • ইনজেকশন মোল্ডিং এর সময় তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ
  • এছাড়াও কাগজ ও সিমেন্ট প্রসেসিং, পাওয়ার স্টেশন, ভ্যাকুয়াম সিস্টেম, এমআরআই মেশিন ও লেসার শীতলীকরণ ইত্যাদি কাজেও চিলার ব্যাবহার করা হয়।

চিলার কিভাবে কাজ করেWhat is chiller

চিলারে মূলত ৪টি কম্পোনেন্ট থাকে-

১। ইভ্যাপরেটর
২। কম্প্রেসর
৩। কনডেন্সর
৪। এক্সপ্যানশন ভাল্ভ

what is chiller

নিম্নচাপের রেফ্রিজারেন্ট ইভ্যাপরেটরে প্রবেশের মাধ্যমে প্রক্রিয়াটি শুরু হয়। ইভ্যাপরেটরটি ১টি শেল অ্যান্ড টিউব টাইপ হিট এক্সচেঞ্জার হিসাবে কাজ করে। প্রসেস ফ্লুয়িড হিট এক্সচেঞ্জারের টিউবের মধ্য দিয়ে এবং রেফ্রিজারেন্ট শেল এর মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়। দুইটি ফ্লুয়িড আলাদা রেখেই টিউব এর দেওয়ালের মাধ্যমে তাপ স্থানান্তর হয়। এর ফলে রেফ্রিজারেন্ট বাষ্পীভূত হয় (নিম্ন চাপের তরল, নিম্ন চাপের বাষ্পে রূপান্তরিত হয়) এবং প্রসেস ফ্লুয়িডের তাপমাত্রা হ্রাস পায়।


নিম্নচাপযুক্ত গ্যাসীয় রেফ্রিজারেন্ট কম্প্রেসরে যায় এবং সেখানে চাপ বৃদ্ধি পেয়ে উচ্চ চাপের গ্যাসীয় রেফ্রিজারেন্ট হিসাবে বের হয়ে আসে।

উচ্চ চাপের গ্যাসীয় রেফ্রিজারেন্ট কনডেন্সরে প্রবেশ করে। কনডেন্সরও একটি শেল অ্যান্ড টিউব টাইপ হিট এক্সচেঞ্জার, যেখানে কুলিং টাওয়ার থেকে ঠাণ্ডা পানি টিউব এর মধ্য দিয়ে এবং রেফ্রিজারেন্ট শেলের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়। ফলে উচ্চ চাপের গ্যাসীয় রেফ্রিজারেন্ট উচ্চ চাপের তরল রেফ্রিজারেন্টে রূপান্তরিত হয়।

উচ্চ চাপের তরল রেফ্রিজারেন্ট এক্সপ্যানশন ভালভে যায়, যা সিস্টেমে রেফরিজারেন্টের প্রবাহকে নিয়ন্ত্রণ করে। কারণ, যদি উচ্চ চাপে রেফ্রিজারেন্ট ইভ্যাপরেটরে প্রবেশ করে, তাহলে পর্যাপ্ত তাপ আদান প্রদান সম্ভব হয়না। এরপর, রেফ্রিজারেন্ট পুনরায় ইভ্যাপরেটরে প্রবেশ করে এবং সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি চক্রাকারে চলতে থাকে।

চিলার কত প্রকার কি কিবিভিন্ন প্রকার চিলারের বর্ননা

চিলার মূলত ২প্রকার-

১। ভ্যাপার অ্যাবসরপশন টাইপ চিলারঃ এই ধরনের চিলারে সিস্টেমের ভিতর রেফ্রিজারেন্ট প্রবাহের জন্য তাপমাত্রা ভিত্তিক ঘনমাত্রার পার্থক্য ব্যাবহার করা হয়।
what is chiller

২। ভ্যাপার কমপ্রেশন টাইপ চিলারঃ এই ধরনের চিলারে সিস্টেমের ভিতর রেফ্রিজারেন্ট প্রবাহের জন্য তড়িৎ চালিত মেকানিক্যাল কম্প্রেসর থাকে।

কনডেন্সরে রেফ্রিজারেন্ট গ্যাস ঠাণ্ডা করে তরলে রুপান্তরিত করার পদ্ধতির উপর ভিত্তি করে ভ্যাপার কমপ্রেশন টাইপ চিলার আবার ২প্রকার-


(১) ওয়াটার কুলড চিলারঃ এই ধরনের চিলারে রেফ্রিজারেন্ট তরলে রুপান্তরের জন্য পানি ব্যাবহার করা হয়। শেলের ভিতর কনডেন্সরের টিউবের উপর দিয়ে কুলিং টাওয়ারের পানি প্রবাহিত করা হয়। এই ধরণের চিলারের কর্মদক্ষতা এবং কুলিং ক্যাপাসিটি এয়ার কুলড চিলারের তুলনায় বেশি হয়।

what is chiller


(২) এয়ার কুলড চিলারঃ এই ধরনের চিলারে রেফ্রিজারেন্ট তরলে রুপান্তরের জন্য বাতাস ব্যাবহার করা হয়। কনডেন্সরের টিউবের উপর দিয়ে ফ্যানের সাহায্যে বাতাস প্রবাহিত করা হয়। এই ধরনের চিলারের ইনস্টলেশন ও রক্ষণাবেক্ষণ খরচ ওয়াটার কুলড চিলারের তুলনায় কম এবং তুলনামূলক কম জায়গাতেই এই চিলার স্থাপন করা সম্ভব। কিন্তু খোলা জাগায় স্থাপন করা হয় বলে, এরা ওয়াটার কুলড চিলারের তুলনায় কম দীর্ঘমেয়াদি এবং নিকটবর্তী এলাকার শব্দদূষণ করে।

what is chiller


আবার, কম্প্রেসরের ধরনের উপর ভিত্তি করে চিলার কয়েক প্রকার হয়-

১/ সেন্ট্রিফিউগাল কম্প্রেসরঃ সাধারণত ওয়াটার কুলড চিলারে ব্যাবহার করা হয়।

২/ রেসিপ্রকেটিং কম্প্রেসরঃ এদের এয়ার এবং ওয়াটার কুলড উভয় চিলারেই ব্যাবহার করা যায়। বর্তমানে এই ধরনের কম্প্রেসর সাধারণত ছোট রিফ্রিজারেটর ও রিফ্রিজারেশন সিস্টেমে বেশি দেখা যায়।

৩/ স্ক্রল কম্প্রেসরঃ এদেরও এয়ার এবং ওয়াটার কুলড উভয় চিলারেই ব্যাবহার করা যায়। এখানে ২টি স্পাইরাল প্লেট এর মাধ্যমে রেফ্রিজারেন্টকে কম্প্রেস করা হয়। প্লেট ২টির ১টি স্থির থাকে এবং অপরটি ঘুরে।

৪/ ফ্রিকশনলেস সেন্ট্রিফিউগাল কম্প্রেসরঃ এটি অত্যন্ত এনার্জি এফিশিয়েন্ট প্রযুক্তি। এখানে, ম্যাগনেটিক বিয়ারিং ব্যাবহার করা হয় এবং কোন লুব্রিকেন্ট এর প্রয়োজন পড়ে না।

2/Post a Comment/Comments

Post a Comment

Previous Post Next Post

Multiplex ads